1. [email protected] : শেয়ারখবর : শেয়ারখবর
  2. [email protected] : Admin : Admin
  3. [email protected] : muzahid : muzahid
  4. [email protected] : nayan : nayan
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন

পুঁজিবাজারে হঠাৎ করেই আলোর ঝিলিক নতুন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা

  • আপডেট সময় : বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০
  • ৩৭৫ বার দেখা হয়েছে
digital-stock

ধুঁকতে থাকে পুঁজিবাজারে হঠাৎ করেই আলোর ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। পতনের ধারা কাটিয়ে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চলছে মূল্য সূচকের। তলানিতে নেমে যাওয়া লেনদেন আবারও গতি ফিরে পেয়েছে। এতে পুঁজিবাজার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসায় পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

তারা বলছেন, পুঁজিবাজারের মূল সমস্যা ছিল আস্থার সংকট। আস্থার সংকটের কারণেই পুঁজিবাজার এতো দিন ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিএসইসির এমন ভূমিকায় পুঁজিবাজারের ওপর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে।

এদিকে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে থেকেই পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে। ধারাবাহিক দরপতনে পুঁজি হারিয়ে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী বাজারের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এমন পরিস্থিতিতেই মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়। ফলে পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। এতে প্রায় সব বিনিয়োগকারী বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েন।

তারা বলছেন, কয়েক দিন ধরে পুঁজিবাজারে টানা উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। তবে এরপরও লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। ভয়াবহ ধসের কবলে পড়ে যে পরিমাণ লোকসান হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে। তবে নতুন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে তা অব্যাহত থাকলে পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরে আসবে এবং লোকসান কাটিয়ে বিনিয়োগকারীরা মুনাফার মুখ দেখবেন।

সূচক ফিরেছে সাড়ে ৩০০ পয়েন্টে
ধুঁকতে থাকা পুঁজিবাজার মূলত ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে গত ৭ জুন থেকে। মাঝে মধ্যে ছোট দরপতন হলেও মূলত ওই সময় থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে পুঁজিবাজার। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৩৪৬ পয়েন্ট। অবশ্য এর মধ্যে শেষ সাত কার্যদিবসেই সূচকটি বেড়েছে ২১৯ পয়েন্ট।

৫০ কোটি টাকার লেনদেন পৌঁছেছে ৬০০ কোটিতে
আস্থা সংকটে ধুঁকতে থাকা পুঁজিবাজারে দেখা দেয় মারাত্মক লেনদেন খরা। দরপতন ঠেকাতে বিএসইসির আগের কমিশন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দামে ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) নির্ধারণ করে দিলে এই লেনদেন খরা শুরু হয়। ডিএসইর লেনদেন কমে ৫০ কোটি টাকায় নেমে আসে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পরও ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত রেখেছে। তবে তলানিতে নেমে যাওয়া লেনদেন আবার ৬০০ কোটি টাকায় উঠে এসেছে। ঈদের পরের দুই কার্যদিবস মঙ্গলবার ৬৭৬ কোটি এবং সোমবার ৬৭২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আর ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৮০ কোটি টাকার।

বাজারে ফিরেছে ২১ হাজার কোটি টাকা
ধস কাটিয়ে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরে আসায় বাজারে ২১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা ফিরে এসেছে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে এই অর্থ ফিরেছে। ধসের কবলে পড়ে ৪ জুন ডিএসইর বাজার মূলধন ৩ লাখ ৯ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকায় নেমে যায়, সেই বাজার মূলধন এখন ৩ লাখ ৩১ হাজার ২৩৬ কোটি টাকায় উঠে এসেছে।

পুঁজিবাজারের এই চিত্র সম্পর্কে বিনিয়োগকারী মনির হোসেন বলেন, পুঁজিবাজার ধস কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এটা আমাদের জন্য আশার কথা। কিন্তু পতনের কবলে পড়ে আমরা যে পরিমাণ অর্থ হারিয়েছি তার খুবই সামান্য অংশ ফিরে এসেছে। ডিএসইর বাজার মূলধনের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। পতনের কবলে পড়ে বিনিয়োগকারীরা এক লাখ কোটি টাকার ওপরে হারিয়েছেন, সেখানে কেবল ২১ হাজার কোটি টাকা ফিরেছে।

তিনি বলেন, এখনও প্রায় সব সাধারণ বিনিয়োগকারী লোকসানে রয়েছেন। তারপরও বাজারের যে গতি দেখছি, বিশেষ করে বিএসইসির পদক্ষেপ নিয়ে নতুন করে আশাবাদী হওয়া যায়। অনিয়মের কারণে বেশ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিএসইসি জরিমানা করেছে। একাধিক দুর্বল কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাতিল করে দিয়েছে। বিএসইসি এই অবস্থা ধরে রাখতে পারলে পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরবেই। আমরাও লোকসান কাটিয়ে মুনাফার মুখ দেখতে পারবো।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, পুঁজিবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে। যার ফলে এমন টানা উত্থান প্রবণতা দেখা দিয়েছে এবং লেনদেনের গতি বেড়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন কমিশন বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়ায় বাজারের ওপর এই আস্থা বাড়ছে।

তিনি বলেন, নতুন কমিশন কয়েকটি দুর্বল কোম্পানির আইপিও বাতিল করেছে। বাজারে এসব তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। সব মিলিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে।

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাজার যখন পতনের ধারা কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফেরে, তখন কিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দামও বাড়ে। সুতরাং এ পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। গুজবে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত না নিয়ে ভালো করে তথ্য যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভালো লভ্যাংশ দেয় অর্থাৎ ফান্ডামেন্টাল প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা উচিত।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নতুন কমিশন বেশকিছু ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে, এতে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে। যার কারণে পুঁজিবাজারে টানা উত্থান দেখা দিয়েছে। তবে আমাদের বিনিয়োগকারী ভাইয়েরা এখনো অনেক লোকসানে রয়েছেন। বিএসইসিকে অনিয়কারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে, তাহলেই বাজারে সুদিন ফিরে আসবে এবং বিনিয়োগকারীরা লোকসান কাটিয়ে মুনাফার দেখা পাবেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ