1. [email protected] : শেয়ারখবর : শেয়ারখবর
  2. [email protected] : Admin : Admin
  3. [email protected] : muzahid : muzahid
  4. [email protected] : nayan : nayan
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন

৪৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএসইসি

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ২৫ জুন, ২০২১
  • ১৫৭ বার দেখা হয়েছে
Bsec-tower

রিং শাইন টেক্সটাইলসের কেলেঙ্কারির কিছুটা সুরাহা করতে পেরেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তদন্ত করে তারা পেয়েছে, দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে ৪৪ জনই শেয়ার নিয়ে কোনো টাকা পরিশোধ করেনি। এ ঘটনায় সিকিউরিটজ ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

গতকাল বিএসইসির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। উদ্যোক্তা বা পরিচালক ও ৭৩ জন সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছে ২৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে এই পরিশোধিত মূলধন ২৮৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন উদ্যোক্তা বা পরিচালক এবং ৩৩ জন সাধারণ শেয়ারহোল্ডার প্লেসমেন্ট শেয়ারের বিপরীতে কোনো টাকা পরিশোধ করেননি।

এছাড়া ২০১৭ সালের ৩০ জুন থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকাশিত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক চিত্র উঠে আসেনি। এজন্য সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ আইন ও মানি লন্ডারিং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১২ মার্চ পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠান রিং শাইনকে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তোলার অনুমোদন দেয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি যন্ত্রপাতি ও কলকব্জা ক্রয়, ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করতে শেয়ারবাজারে ১৫ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ১৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে।

আইপিওর কিছুদিনের মধ্যেই কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেশ ছেড়ে যাওয়ার গুজবের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব সাময়িকভাবে জব্দ করা হয়। বিএসইসির অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যবস্থা নিয়েছিল। এর পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাওয়া উৎপাদন পুনরায় শুরুর মাধ্যমে ব্যবসার উন্নয়নে কোম্পানিটির পর্ষদ ভেঙে সাত স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। কোম্পানিটির অনিয়ম অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এছাড়া রিং সাইনের কেলেঙ্কারি তদন্তে ৬১টি বিও হিসাবের তথ্য তলব করে বিএসইসি।

এ পরিস্থিতিতে গত ২০ মে কমিশন সভা করে বিএসইসি রিং শাইনের আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলন করা অর্থের ৪০ কোটি টাকা ব্যবহারের অনুমতি দেয়। সে সময় বিএসইসি থেকে জানানো হয়, এই অর্থ থেকে শ্রমিকদের অবসর ভাতা ১৫ কোটি টাকা, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের বকেয়া তিন কোটি টাকা, তিতাস গ্যাসের বকেয়া তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণ ১০ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ঋণ ছয় কোটি টাকা এবং বিবিধ খাতে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা যাবে।

ওই কমিশন সভায় ন্যূনতম ৫১ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারের উপস্থিতিতে কোম্পানিটির আইপিওর অর্থ ব্যবহার পরিকল্পনা সংশোধন অথবা পরিবর্তনের ঘটনা-উত্তর অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। এছাড়া আইপিওতে আসার আগে রিং শাইন প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে যে টাকা উত্তোলন করেছে বলে দেখিয়েছে, তার মধ্য থেকে কোনো অর্থ জমা না হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর শেয়ার এবং তার বিপরীতে ইস্যু করা সব বোনাস শেয়ার বাজেয়াপ্ত করে কোম্পানির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তও নেয় কমিশন।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে আইপিও অনুমোদনের সময়ই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে রিং শাইনের ব্যাপারে আপত্তি তোলা হয়েছিল। তখন বেরিয়ে এসেছিল অস্তিত্বহীন ইউনিভার্স নিটিং কোম্পানির নামে রিং শাইন টেক্সটাইলের প্রায় ২৫ কোটি টাকার শেয়ার রয়েছে। রিং শাইন টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ইউনিভার্স নিটিংয়ের চেয়ারম্যান পদে আছেন, যা অনৈতিক। এ বিষয়ে ডিএসই থেকে বিএসইসিতে একটি অভিযোগও দেয়া হয়। সেই সঙ্গে কোম্পানিটির তালিকাভুক্তিও আটকে দেয় ডিএসই।

কিন্তু ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর কমিশন সভা করে বিএসইসি জানায়, বিএসইসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে রিং শাইন টেক্সটাইল নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মিথ্যা। ইউনিভার্স নিটিং গার্মেন্টসের চেয়ারম্যান সুং ওয়ে মিন রিং শাইন টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিষয়টি প্রসপেক্টাসের ১৯৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা আছে।

শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে রিং শাইন টেক্সটাইলের এমডির স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইউনিভার্স নিটিং গার্মেন্টস কর্তৃক রিং শাইনের ধারণ করা শেয়ারে এক বছরের পরিবর্তে তিন বছর লকইনের শর্তারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চাপাচাপিতে এক পর্যায়ে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই।

২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্ত করা হয়। তবে বছর না ঘুরতেই কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিএসইসির নতুন কমিশন আসার পর চলতি বছরে পুনরায় উৎপাদন শুরুর মাধ্যমে ব্যবসায় উন্নয়নের লক্ষ্যে কোম্পানিটির পর্ষদ ভেঙে সাত স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ