1. [email protected] : শেয়ারখবর : শেয়ারখবর
  2. [email protected] : Admin : Admin
  3. [email protected] : muzahid : muzahid
  4. [email protected] : nayan : nayan
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ন

ভ্যাট ফ্যাকি দিয়ে ইসলাম অক্সিজেনের আইপিও অনুমোদন পেতে মন্ত্রীর দ্বারস্থ

  • আপডেট সময় : বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩
  • ৬৯ বার দেখা হয়েছে

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনে অনিয়মের বেড়াজাল টপকাতে এবার একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর দারস্থ হয়েছে ইসলাম অক্সিজেন কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি কোম্পানি সচিব আকতারুজ্জামান স্বীকার করে বলেন, আমরা আমাদের আইপিও পাস করতে বিভিন্ন জায়গায় যাব। কোন মন্ত্রী যদি সুপারিশ করেন আমাদের কিছু করার নাই। এটা আমাদের মালিকপক্ষ জানেন। আমি বেশি কিছু জানি না।

জানা গেছে, কোম্পানির ভ্যাট ফ্যাকির বিষয়টি আদালত পর্যন্ত যাওয়ায় আইপিও অনুমোদন কাজ করা তৃতীয় পক্ষ একজন মন্ত্রীর মাধ্যমে কমিশনকে সুপারিশ করেছে। ভ্যাট ফাকির বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই আইপিও অনুমোদন করিয়ে নিতে কোম্পানি কর্তপক্ষ এ কাজ করছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে যথেস্ট তথ্য উপাত্ত রয়েছে হাতে।

এদিকে শেয়ারবাজারে আসার আগেই ভ্যাট ফাকি দেয়া কোম্পানিকে অনুমোদন না দেয়ার দাবি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। বিনিয়োগকারী মুসা বলেন, এসব কোম্পানি বাজারে আসলে বিনিয়োগকারীদের আরো ক্ষতি হবে। কমিশনকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার দাবি করেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির একজন কমিশনার বলেন, এসব কোম্পানির আইপিও পাস করতে যদি এত উপর থেকে সুপারিশ আসে। তাহলে কাজ করবে কিভাবে ?

তথ্য মতে, ইসলঅম অক্সিজেন কোম্পানির আইপিও অনুমোদনে কাজ করতে ফরিদ গং একবজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। ফরিদ গংরা হচ্ছেন পুঁজিবাজারের প্লেসমেন্ট কারবারির অন্যমত হোতা। ( প্লেসমেন্ট গং নিয়ে আমাদের আমাদের পরবর্তীতে সিরিজ নিউজ আসবে)

কোম্পানিটির মূসক দাখিল পত্রে কম বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করে ৬১ কোটি পনেরো লাখ তিরানব্বই হাজার ২২০ টাকা মূসক ফাঁকির প্রমান পাওয়া গেছে। কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুজিবাজার থেকে ৯৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড একচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এক চিঠি থেকে এমন তথ্য জানা যায়।

মেসার্স ইসলাম অক্সিজেন লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ বছরের মাসিক দাখিলপত্রের সাথে কর অঞ্চল – ৭ থেকে পাঠানো অডিট ফার্মের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা নিরীক্ষা প্রতিবেদন আড়াআড়িভাবে যাচাই করা হয়। এক্ষেত্রে অডিট ফার্মের বার্ষিক রিপোর্টে প্রদর্শিত মূল্যের সাথে মূসক সংক্রান্ত দাখিল পত্রে ব্যাপক অসামঞ্জ্যসতা ধরা পড়ে।শুধু তাই নয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে আর্থিক বিবরণী দেওয়া হয়েছে তার সাথে স্থানীয় ভ্যাট কার্যালয়ে দাখিলকৃত মাসিক রিটার্নের তথ্যের অমিল পাওয়া গেছে।

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে চাওয়া ইসলাম অক্সিজেনের সঠিক ভ্যাট প্রদান নিয়ে সন্দেহ তৈরী হয়েছে। যাতে কোম্পানিটির সঠিক ভ্যাটের পরিমাণ নির্ণয়ে বিগত ৫ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব চেয়ে ইস্যু ম্যানেজার, রেজিস্টার টু দ্য ইস্যু ম্যানেজার ও কর অঞ্চলের কমিশনারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। ৫৬৬৩৫৬৫৭৫৪০২ ই-টিন নাম্বারের ইসলাম অক্সিজেন লিমিটেডের সঠিক মূসক নিরূপন/রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে বিগত ৫ অর্থবছরের (২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১) আয়কর রিটার্ণের সাথে অডিট ফার্মের নিরীক্ষা প্রতিবেদন চায় কমিশন ।চিঠির প্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রমান পাওয়া যায় ইসলাম অক্সিজেন বিপুল পরিমাণ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

অডিট ফার্ম কর্তৃক প্রণীত বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং মাসিক দাখিল পত্রে উল্লিখিত বিক্রয় তথ্যে আড়াআড়ি যাচাই করে দেখা যায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৮ কোটি ৭১ লাখ ৮৯হাজার ৯৫৪ টাকা পরিহারকৃত মূসক ছিলো। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে যার পরিমাণ ১০ কোটি ৪৩ লাখ ২৩ হাজার ১৪৬ টাকা। পরের অর্থবছর অর্থাৎ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যার পরিমাণ আরও বেড়ে ১১ কোটি ৮৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯৮টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৩কোটি ১৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭২১ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে এর পরিমাণ ১৬ কোটি ৯১ হাজার ৬১ হাজার ৭০০ টাকা। উল্লেখিত তথ্যমতে ৬১কোটি ১৫ লাখ ৯৩হাজার ২২০ টাকার মূসক পরিহার করেছেন। প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে মূসক পরিহার করেছে।

উল্লেখ্য ইসলাম অক্সিজেন লিমিটেড ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানি। কোম্পানিটি বিভিন্ন হাসপাতাল এবং শিল্পের গ্যাস বিক্রেতা হিসেবে কাজ করছে। সম্প্রতি কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে চাঁদা সংগ্রহের জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করেছে। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে এর প্রতিটি শেয়ারের দর নির্ধারণের জন্য গত বছর ২৫ অক্টোবর রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে রোড শো’ করেছে। কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ৯৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।

এ জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ২৬.৪৭ শতাংশ শেয়ার ছাড়ছে।প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৬.৭৯ শতাংশ। পরিচালকদের হাতে শেয়ার থাকছে ৬৮.৭৪ শতাংশ। কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে জনতা ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও সোনালী ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ